কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্মাণকাজ শেষ হয়নি এখনো। বাকি রয়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ কাজ। তবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) আশাবাদী, সেপ্টেম্বরের মধ্যেই সব কাজ শেষ হবে এবং অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু করা সম্ভব হবে।
সূত্র জানায়, সমুদ্রের ভেতরে রানওয়ে সম্প্রসারণের কাজ ৯৭ ভাগ শেষ হয়েছে। বাঁধের কাজ সম্পন্ন হয়েছে ৯৫ ভাগ, প্রিসিশন অ্যাপ্রোচ লাইট স্থাপন ও মেইনটেন্যান্স স্টিল ব্রিজের কাজ শেষ হয়েছে ৮৫ ভাগ। তবে রানওয়ের চারপাশে নিরাপত্তা সীমানা প্রাচীর, টহল সড়ক এবং ড্রেনেজ সিস্টেমের কাজ এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি।
টার্মিনাল ভবনের ভেতরে প্যাসেঞ্জার অ্যারাইভাল-ডিপারচার লাউঞ্জ, কনভেয়ার বেল্ট ও ইমিগ্রেশন কাউন্টারের কাজও চলছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করতে ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব কাজ সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছে বেবিচক।
বেবিচক ইতোমধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসসহ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন এয়ারলাইনসকে ফ্লাইট চালুর বিষয়ে চিঠি দিয়েছে। আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী আইকাওকে (ICAO) চিঠি পাঠানো হয়েছে এবং এ বিষয়ে স্বীকৃতিও চাওয়া হয়েছে।
বেবিচকের সদস্য (অপারেশন অ্যান্ড প্ল্যানিং) এয়ার কমডোর আবু সাঈদ মাহবুব খান বলেন, “কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত করার কাজ দ্রুতগতিতে চলছে। নির্ধারিত সময়ে বাকি কাজ শেষ হবে ইনশাআল্লাহ্। আইকাওকেও প্রয়োজনীয় তথ্য দেওয়া হয়েছে।”
বিমানবন্দর নির্মাণ প্রকল্পে কিছু জটিলতা রয়েছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো প্রায় ৩ হাজার ৩০০ পরিবারকে উচ্ছেদ না করতে পারা এবং জমি অধিগ্রহণ না হওয়া। বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ২৫-৩০টি যাত্রীবাহী ও ৬-১০টি কার্গো বিমান চলাচল করছে কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে।
সরকার মনে করছে, সমুদ্রঘেরা কক্সবাজার বিমানবন্দর চালু হলে এটি শুধু পর্যটনের জন্যই নয়, বরং আঞ্চলিক রি-ফুয়েলিং ও টেকনিক্যাল ল্যান্ডিংয়ের কেন্দ্র হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার ভৌগোলিক প্রেক্ষাপটে কক্সবাজার হয়ে উঠতে পারে একটি আঞ্চলিক এভিয়েশন হাব।
ইউএস-বাংলার মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মো. কামরুল ইসলাম জানান, “শীতকালীন সময়সূচি থেকে আমরা ফিজিবিলিটি সার্ভে করব। যাত্রী চাহিদা ও রুট অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
অন্যদিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) এবিএম রওশন কবীর বলেন, “বেবিচকের চিঠি অনুযায়ী কক্সবাজার থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনার সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করছে বিমান।”
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে, অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকেই কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে প্রথম আন্তর্জাতিক ফ্লাইট উড্ডয়ন করতে পারে। তখন সমুদ্রপাড়ের এই বিমানবন্দর দেশি-বিদেশি পর্যটন ও বাণিজ্যিক কার্যক্রমে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
ওসামা বিন মাহী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত